FROM MEHERPUR WITH LOVE.
(মেহেরপুর-এর আঞ্চলিক ভাষায়)
II ''৪২০ নম্বর বোতলের অষুদ'' সকল রোগের মহা-অষুদ II
মাউই বাড়ি থেকি কায়দা মতোন বসান দিয়ি নুরা পাগলা বিড়ি খাওয়ার নাম করি বাড়ি থেকি পালি যাচ্ছি। গিরাম পার হয়িই দেইরিপুর বাজার। সেকিনে এক হুমিও হলে দেখে লিখা আছে "একিনে ১০০% গ্যারান্টি সহকারে চিকিৎসা করা হয়, বিফলে ডাবল ট্যাকা ফেরত। ভিজিট ৩০০/- ট্যাকা।"
নুরা পাগলা ইবার মুনে মুনে শয়তানি বুদ্দি আটলু যে, এমুন রোগের কতা বুলবু, ডাক্তার অষুদ খুঁজি পাবেনা। দাড়া শালা ডাক্তারের ৬০০/- ট্যাঁকা বাগাবো। নুরা ডাক্তারের চেম্বারে ঢুকলু।
নুরা- দাক্তার সায়েব, আমি তো খুব বিপাদের মদ্দি আচি।
ডাঃ - বোলেন আপনার কি হয়িচে?
নুরা- দাক্তার সায়েব, খুউব সমেসসা আমার।
ডাঃ- আরে বুলবেন তো আপনার কি হয়িচে? (ধমক দিয়ি)
নুরা- মুকে আমার একদোম স্বাদ নেই, কি খাচি কিচ্চু বুজতি পাচ্চিনি। মাউই বাড়ি ঘি খালাম, না কি খালাম শাইন কত্তি পাচ্চিনি।
ডাঃ- কম্পাউনডার, ৪২০ নম্বর বোতলের অষুদডা উয়ির মুকে ২০ ফুটা দিয়ি দেও। (অসুদ দিয়া হলু)
ডাঃ- আপনার জিব ঠিক হয়ি গিচে, আর কুনু সমেসসা নেই। একুন থেকি সব কিচুর স্বাদ পাবেন। আমার ভিজিট ৩০০/- ট্যাকা দেন।
ইবার নুরা চালাকি ধরা খেয়ি ডাক্তারকে ৩০০/- ট্যাকা বের করি দিয়ি পস্তাতি পস্তাতি চোলি আসচি। আর নতুন ফন্দি আঁটছি যে কি করি এই ট্যাকা তুলবু।
ছ'মাস পর নুরা মুকে গোঁপ-দাড়ি বাদি নিয়ি আবার গিচে। মুনে মুনে শয়তানি বুদ্দি আটলু যে, এমুন রোগের কতা বুলবু, ডাক্তার অষুদ খুঁজি পাবেনা। দাড়া দেকচি ইবার।
নুরা- দাক্তার সায়েব, আমি তো খুব বিপাদের মদ্দি আচি।
ডাঃ - বোলেন আপনার কি হয়িচে?
নুরা- দাক্তার সায়েব, খুউব সমেসসা আমার।
ডাঃ- আরে বুলবেন তো আপনার কি হয়িচে?
নুরা- আমার সিরিতি শক্তি একেবারেই হারি গিচে। কিচ্চু মুনে থাকে না আমার। সকালে কি খায় দুপুরে মুনে থাকে না, আর দুপুরে কি খায় রাইতি মুনে থাকে না। কার কাচে ক' ট্যাকা পাব, তাও মনে কত্তি পাচ্চি নি। অষুদ দেন। (দি মুনে মুনে হাসচি)
ডাঃ- কম্পাউনডার, ৪২০ নম্বর বোতলের অসুদডা উয়ির মুকে ২০ ফুটা দিয়ি দেও।
(কম্পাউনডার যেই অষুদ বের কত্তি গিচে)
নুরা- দাক্তার সায়েব উতে তো মুত আচে, ছ'মাস আগে আমাকে খায়িলেন।
ডাঃ- এই তো আমার অষুদে কাজ হয়িচে। অষুদের কি গুণ দেকিচেন ! না খেতিই রোগ ভালো হয়ি গিচে। আপনি সিতি শক্তি ফিরি পেয়িচেন, দেন ৩০০/- ট্যাকা।
আবারো নুরা পাগলা ধরা খেয়ি ৩০০/- ট্যাকা বের করি দিয়ি বেরি চোলি এসি। এই ৬০০/- ট্যাকার দুক্কু আর সজ্যু কত্তি না পেরি খেজুর গাছের মাথায় উঠি দুই রাকাত নফল নামাজ পইড়ি এক নাপে আত্তহত্যা কইরি মইরি গেল।
ইখানেই নুরা পাগলার জীবনাবসান ঘটলু। 'ইটাখুলা এতিমখানা' নুরা'র নামে নামকরণ করা হলু ''নুরা মহেলা এতিমখানা", ইটাখুলা রোড, মেহেরপুর।
আর আমরা সজ্জ্যু কত্তি পাচ্চিনি। নুরা'র মিত্তুতে কৈতরী বুইন খুব শোকাহত, মর্মাহত ও বেদনাহত। কৈতরী বুইন আর কেন্দেন না, মানুষ তো আর সারাজীবন বাঁচেনাকো, নুরা পাগলাউ সেরাম। নোকটা কত ভাল ছেল, দাক্তার সায়েব আর কম্পাউনডার মিলি মেরি ফেললু নোকটাকে। আহা রে ! দাঁত থাকতি তো আর আমরা মরমো বুজিনি। আমাদের কৈতরী বুইনের একুন কি হবে গো? বুইন আমার বিধবা হয়ি গেলো গো ! যদিও শাকিল ভাই আচে। মোটেও টেনশোন ফেল করবা না কৈতরী বুইন। নুরা ভায়ির কাচে যে আদর ভালবাসা পেয়িচো, সেইসব শাকিল ভাই দিইতি পাইরবি তুমাকে। আল্লার উপার ভরসা রাখতি হবি।
নুরা মইরি গি আমাদের দগদিভাজাপুড়া জানডা বাচলু বাব্বাহহহ ! আসু সব্বাই নুরা পাগলার নেগি জামাতে দাড়ি দুয়া করি দিই। নুরা পাগলা আমাদের মনের ভেতর বেইচি থাইক যুগ যুগ ধইরি।
মূল লেখা লিখেছেনঃ
SI Babu, মেহেরপুর।
SI Babu, মেহেরপুর।
প্রাপ্ত মূল লেখার আংশিক সম্পাদনা শেষে আরো কিছু লেখা সংযোজন করা হয়েছে।
ছবি সংযোজিত
ছবিঃ গু গুলে পাওয়া
ছবিঃ গু গুলে পাওয়া